শিক্ষকের সাথে আদব
শুধু বই পড়ে জ্ঞান পূর্ণাঙ্গ হয় না, জ্ঞান অর্জনের জন্য প্রয়োজন শিক্ষকের সাহচর্য। জ্ঞান অর্জনের ক্ষেত্রে সফলতার অন্যতম শর্ত হলো শিক্ষকের মর্যাদা অনুধাবন করা। তাই শিক্ষককে শ্রদ্ধা করার কোনো বিকল্প নেই।
শিক্ষকের সামনে আদব
১. ভদ্রভাবে বইয়ের পাতা উল্টাতে হবে
২. তর্ক করা যাবে না
৩. তার কথাকে ছাপিয়ে নিজে কথা বলা উচিত না
৪. শিক্ষকের সামনে সামনে হাঁটা অনুচিত
৫. তার সামনে বেশি কথা বলা থেকে বিরত থাকতে হবে
৬. শিক্ষক কথা বলার সময় তাকে বারবার থামানো যাবে না, কথা শেষে প্রশ্ন করতে হবে।
৭. অতিরিক্ত প্রশ্ন করা উচিত না, এতে নিজের ভেতর বিভ্রান্তি তৈরি হতে পারে, শিক্ষকও বিরক্ত হতে পারেন।
৮. তাকে সামনাসামনি নাম ধরে ডাকা যাবে না (যেমন, ‘ক উস্তাজ’) । শুধু উস্তাজ/ উস্তাজা/ শায়খ বলতে হবে। আল্লাহ (সুবহানাহু তা’আলা) কুরআনে যেমনটা শিখিয়েছেন,”তোমরা পরস্পরকে যেভাবে ডাকো রাসূলকে সেভাবে ডেকো না…।” (২৪:৬৩) রাসূলুল্লাহ (সা.) উম্মাতের জন্য ছিলেন শিক্ষক স্বরুপ।
৯. শিক্ষককে দূর থেকে জোরে ডাক দেয়া যাবে না। কাছে এসে সম্মানের সাথে কথা বলতে হবে।
১০. যদি শিক্ষকের কোনো দোষ/ভুল ধরা পড়ে তবে তাকে যেন ছাত্র অশ্রদ্ধা শুরু না করে, ছোট না মনে করে। এর ফলে সে শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবে। প্রতিটা মানুষই ভুল করবে-এটাই স্বাভাবিক।
১১. অন্য শিক্ষকের কাছে পড়তে চাইলে বর্তমান শিক্ষকের পরামর্শ নিতে হবে, যেন কোনোভাবেই তার সম্মানহানি না হয়।
সতর্কতা: অতিরিক্ত সম্মান বা শ্রদ্ধা প্রদর্শনের মাধ্যমে শিরক-কুফরে জড়িয়ে যাওয়া যাবে না।
Source: Etiquette of seeking knowledge – Shaykh Bakr Aboo Zayd
হিফজ অন-ক্যাম্পাস ক্লাস (শনিবার -বৃহস্পতিবার)
আসসালামুআলাইকুম,
আগামী ৬ মার্চ ২০২১ থেকে হিফজ বিভাগের শিক্ষার্থীরা শনিবার থেকে বৃহস্পতিবার স্কুল প্রাঙ্গনে এসে ক্লাস করবে, ইন-শা-আল্লাহ। আপনারা সকলেই অবগত যে, কিছুদিন পূর্বে আমরা একটি সার্ভে করেছিলাম। যেখানে অধিকাংশ অভিভাবক স্কুলে উপস্থিত থেকে হিফজ করার ব্যপারে মতামত প্রদান করেছেন। তবে যারা এখনো স্কুলে এসে হিফজ করাটা নিরাপদ মনে করছেন না সেসব শিক্ষার্থী পূর্বের মত অনলাইনে অথবা হোয়াটসঅ্যাপে হিফজ চালিয়ে যাবে, ইন-শা-আল্লাহ।
বিশেষভাবে উল্লেখ্য, শিক্ষার্থীরা স্কুল প্রাঙ্গনে প্রবেশের পূর্বে অবশ্যই মাস্ক পরিধান করে আসবে। এছাড়া স্কুল প্রাঙ্গনে প্রবেশের পরেও পরিপূর্ণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে অবস্থান করতে হবে।
নাজেরা ও হিফজ ক্লাসের সময়:
শনিবার:
– ছেলে শিক্ষার্থী (নাজেরা ও হিফজ): সকাল ৭:০০ – ৯:৩০ (পার্ট-টাইম: ৭:০০ – ৯:০০)
– মেয়ে শিক্ষার্থী (নাজেরা ও হিফজ): সকাল ১০:০০ – ১২:৩০ (পার্ট-টাইম: ১০:০০ – ১২:০০)
রবিবার – বৃহস্পতিবার
– ছেলে শিক্ষার্থী (নাজেরা ও হিফজ): সকাল ৭:০০ – ১০:০০ (পার্ট-টাইম: ৭:০০ – ৯:০০)
– মেয়ে শিক্ষার্থী (নাজেরা ও হিফজ): সকাল ১১:০০ – ২:০০ (পার্ট-টাইম: ১১:০০ – ১:০০)
এস.সি.ডি এডমিন।
বি.দ্র.
১। স্কুল প্রাঙ্গনে হিফজ-এর ক্লাস আয়োজনে এস.সি.ডি সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করার যথাসাধ্য চেষ্টা করবে। তথাপি কোনো শিক্ষার্থী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে এর দায়দায়িত্ব স্কুল কর্তৃপক্ষ বহন করবে না।
২। সতর্কতা হিসেবে আমরা আপাতত কোনো টিফিন প্রদান করছি না। তবে শিক্ষার্থীরা বাসায় তৈরি খাবার নিয়ে আসতে পারবে।
আরবি: বাড়ির কাজ
আসসালামু আলাইকুম,
অভিভাবকগণ ১ম শ্রেণি থেকে ১০ম শ্রেণির আরবি ক্লাসের বাড়ির কাজ নির্ধারিত লিংক থেকে দেখে নিবেন।
মর্নিং শিফট (১ম-১০ম শ্রেণি) আরবি বাড়ির কাজ :
https://docs.google.com/document/d/1AKw8bM8an-HqKwgBGQ1BfYNDeLs415uDHoTFJZ6f2fA/edit?usp=sharing
ডে শিফট (১ম-৯ম শ্রেণি) আরবি বাড়ির কাজ :
https://docs.google.com/document/d/10i4NhxWNP9bvdgeR4YzQAcNN3cYrwxcdAgBsqY4YHpM/edit?usp=sharing
মাআসসালাম
কুরআন: বাড়ির কাজ
আসসালামু আলাইকুম,
অভিভাবকগণ ১ম শ্রেণি থেকে ৪র্থ শ্রেণির কুরআন ক্লাসের বাড়ির কাজ নির্ধারিত লিংক থেকে দেখে নিবেন।
মর্নিং শিফট (১ম-৪র্থ শ্রেণি) কুরআন বাড়ির কাজ :
https://docs.google.com/document/d/1MimHPjYVVrURUpIoM9VsGjKzV8233O3PxZPfamitA70/edit?usp=drivesdk
ডে শিফট (১ম-৪র্থ শ্রেণি) কুরআন বাড়ির কাজ :
https://docs.google.com/document/d/1lBQrGtrBRrpDrVlvz67ScREqTHbkv1_NtYc1MAO1qr4/edit?usp=drivesdk
মাআসসালাম
হিফজ অন-ক্যাম্পাস ক্লাস (প্রতি শনিবার)
আসসালামুআলাইকুম,
আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে প্রতি শনিবার এস.সি.ডি স্কুলের হিফজ বিভাগের শিক্ষার্থীরা সাপ্তাহিক পড়া শোনানোর জন্য স্কুলে ক্লাস করবে, ইন-শা-আল্লাহ। বাকি দিনগুলো (রবি-বৃহস্পতি) পূর্বের মত অনলাইনে ক্লাস হবে, ইন-শা-আল্লাহ।
বিশেষভাবে উল্লেখ্য, শিক্ষার্থীরা স্কুল প্রাঙ্গনে প্রবেশের পূর্বে অবশ্যই মাস্ক পরিধান করে আসবে। এছাড়া স্কুল প্রাঙ্গনে প্রবেশের পরেও পরিপূর্ণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে অবস্থান করতে হবে।
কোনো অভিভাবক যদি স্বাস্থ্য ঝুকির কথা মাথায় রেখে শিক্ষার্থীদের স্কুল প্রাঙ্গনের পাঠাতে না চান, তবে তাদের পড়া অনলাইনেই শোনা হবে ইন-শা-আল্লাহ। যারা শনিবার বাসায় থেকে পড়া শোনাবেন, তারা নিচের গুগল ফর্মটি পূরণ করবেন।
https://forms.gle/CQF6axr9bva8C8Ve8
এই ফর্ম যারা পূরণ করবেন, শুধুমাত্র তাদেরকেই শনিবারে ফোন করা হবে। শনিবারের এই ক্লাসে অংশগ্রহনের ক্ষেত্রে যেকোনো একটি মাধ্যম বাছাই করতে হবে।
ক্লাস টাইম:
– মেয়ে শিক্ষার্থী (নাজেরা ও হিফজ): সকাল ৭:০০-১০:০০
– ছেলে শিক্ষার্থী (নাজেরা ও হিফজ): সকাল ১০:৩০-২:০০
এস.সি.ডি এডমিন।
বি.দ্র. প্রতি শনিবার স্কুল প্রাঙ্গনে হিফজ-এর ক্লাস আয়োজনে এস.সি.ডি স্কুল সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করার যথাসাধ্য চেষ্টা করবে। তথাপি কোনো শিক্ষার্থী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে এর দায়দায়িত্ব স্কুল কর্তৃপক্ষ বহন করবে না।
কায়দা, আম্মা পারা, কুরআন ক্লাস লিংক
আসসালামুআলাইকুম,
সম্মানীত অভিভাবকবৃন্দ। আপনারা নিশ্চই অবগত যে আমাদের স্কুলের শিক্ষার্থীরা স্কুলে কুরআন ক্লাসে কায়দা, আম্মা পারা ও কুরআন সহীহ-শুদ্ধভাবে তিলাওয়াত শিখে থাকে। কিন্তু পারদর্শিতার তারতম্যের কারনে আমরা ক্লাসগুলোকে ক্লাসের ভিত্তিতে ভাগ না করে শিক্ষার্থীদের যোগ্যতার উপর ভিত্তি করে নির্ধারন করি। তাই দেখা যায় হয়ত ৪র্থ শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া একজন নতুন শিক্ষার্থী ১ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সাথে কায়দা ক্লাস করছে। আবার ২য় শ্রেণির একজন শিক্ষার্থী যে আম্মা পাড়া পড়ার যোগ্যতা রাখে, সে ৪র্থ শ্রেণির একজন শিক্ষার্থীর সাথে আম্মা পারা পড়ছে।
অর্থাৎ, কুরআন ক্লাস আমরা স্কুলের অন্যান্য বিষয়ের মত শ্রেণির ভিত্তিতে ভাগ না করে যোগ্যতার বিচারে ভাগ করেছি।
নিচে শিফট অনুযায়ী কোন ওস্তাজ/ওস্তাজার কাছে কোন কোন শিক্ষার্থী ক্লাস করবে, ক্লাস লিঙ্ক ইত্যাদির একটি লিস্ট প্রদান করা হল।
https://docs.google.com/document/d/1Oqdj6ibVFcp_XPT9dxZqwqg1gvk-QGDbdfRR96B_VlU/edit?usp=sharing
বি.দ্র.: যারা ফুল-টাইম হিফজ করছে (নাজেরা বা হিফজ), তাদের জন্য এই কুরআন ক্লাস প্রযোজ্য নয়। শুধুমাত্র পার্ট-টাইম হিফজ-এর শিক্ষার্থীরা এই ক্লাস করবে ইন-শা-আল্লাহ।
বাড়ির কাজ
মনিং শিফট: https://drive.google.com/folderview?id=1f46V_YdyRF1uk3Fo59V3GLrNlYwirL3y
ডে শিফট: https://drive.google.com/folderview?id=1D7Uj8AA0gaiphJCkQeiz9sPJOnUgESRn
নার্সারি: https://docs.google.com/document/d/17kxmK1Pbpi9PNFE8lZ0fdWSX8iZOc8dB0CDLQJpOk7s/edit?usp=sharing
কেজি: https://docs.google.com/document/d/1B4loS8Tapx4EUTGXy9NPBx8qkKxjC9z_w26mUCRj1xE/edit?usp=sharing
অভিভাবকদের জন্য কিছু জ্ঞাতব্য ও পরামর্শ
এই স্কুলটি, মুসলিম হিসেবে আমাদের ছেলেমেয়েদের গড়ে তোলার চেষ্টায়, “কমিউনিটি সার্ভিস” হিসেবে প্রতিষ্ঠিত সম্পূর্ণ অলাভজনক একটি প্রতিষ্ঠান। এখানে আপনার সন্তানকে কেন দিয়েছেন/দিচ্ছেন তা ভেবে দেখবেন। কেবল পার্থিব প্রাপ্তি নিয়ে ভাবিত হয়ে থাকলে আপনি, সম্ভবত, ভুল ঠিকানায় এসেছেন। আমরা অনুরোধ করবো:
১) আপনার সন্তানের জন্য নিয়মিত আল্লাহর কাছে দোয়া করবেন, যেন সে ভালো মুসলিম হিসাবে বড় হয়। কখনো প্রকাশ্যেই তাদের সামনে, তাদের জন্য দোয়া করবেন। আমরা স্কুলে তাদের বিভিন্ন দোয়া শেখানোর চেষ্টা করি – আপনারাও ইনশা’আল্লাহ্ নিজেদের মত করে চেষ্টা করবেন, তাদের দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন পরিস্থিতির উপযোগী দোয়া শিক্ষা দিতে। সন্তানদের আল্লাহর কাছে চাইতে শেখানো উচিত।
২) আমাদের সাথে আপনার সন্তান ১ কর্মদিবসে, বেশী হলে পাঁচ ঘন্টা সময় থাকে। বাকী সময়টুকু থাকে আপনাদের কাছে এবং আপনাদের পরিবেশ-প্রতিবেশে। সে হিসাবে, “একাডেমিক ক্যালেন্ডার” অনুযায়ী হিসাব করে দেখলে দেখা যাবে একবছরে (যেমন, ২০১৬ সালে) আপনার সন্তান আমাদের সাথে, স্কুলে, তার সময়ের সর্বোচ্চ ১০.৮৪% কাটিয়েছে/কাটাবে – বছরের বাকী ৮৯.১৬% সময় কাটিয়েছে/কাটাবে আপনার পরিবেশে ও প্রতিবেশে। তাই বাড়ীর পরিবেশ ও প্রতিবেশ বিশুদ্ধ ও সুন্দর না হলে, তাদের চারিত্রিক গঠন নিয়ন্ত্রণ করা পৃথিবীর কোন প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সম্ভব নয়।
৩) ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে, আমাদের সন্তানদের জীবনে তাদের শিক্ষক ও শিক্ষিকাদের অবস্থান কি হওয়া উচিত – তা আমরা নিজেরা যেমন শিখবো, তেমনি আমাদের সন্তানদেরও তা শেখাবো ইনশা’আল্লাহ্! আমরা মনে রাখবো যে, জীবনের একটা পর্যায়ে ছেলে-মেয়েদের কাছে শিক্ষক-শিক্ষিকারা আদর্শ ও অনুকরণীয় ব্যক্তিত্বে পরিণত হন। এই পর্যায়ে তাদের সামনে তাদের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের গীবত, সমালোচনা অথবা তাদের নিয়ে কোন বিরূপ মন্তব্য আমাদের সন্তানদের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। আমরা সাহাবীদের, তাবেঈদের এবং ৪ ইমামের জীবনী পড়লে, ইসলামে শিক্ষকের মর্যাদা সম্বন্ধে পর্যাপ্ত ধারণা লাভ করতে পারবো ইনশা’আল্লাহ্!
৪) আপনার ছেলেমেয়েদেরকে স্মার্টফোন, ইন্টারনেট, টেলিভিশন থেকে দূরে রাখুন। তা না হলে তার চরিত্রশুদ্ধিতে কোন ইসলামী তালিমই কাজে আসবে না। আমরা শিশুদের অবোধ বা অবুঝ মনে করলেও, এ যুগের শিশুরা অত্যন্ত প্রখর বুদ্ধিসম্পন্ন, চতুর। আমরা জেনেছি: প্রথম শ্রেণীতে পড়া এমন ছেলে আছে, যাকে তার বাবা-মা ইন্টারনেট ব্রাউজ করতে দেন এবং আট বছর বয়স্ক এমন ছেলে আছে, যে তার বাবাকে না জানিয়ে ইউটিউব দেখতে বাবার স্মার্টফোনে “ইন্টারনেট ব্যালেন্স” ভরেছে বলে বাবা তার সেই ফোন পরিত্যাগ করেছেন। আপনারা যদি সচেতন না হোন তবে, আপনার সন্তান যে (খবরে প্রকাশিত) ঢাকার স্কুলগামী কিশোর-কিশোরীদের মাঝে পর্ণোগ্রফিতে আসক্ত ৭৭%-এর অন্তর্ভুক্ত হতে যাচ্ছে – তা একপ্রকার নিশ্চিত (নাউযুবিল্লাহ্!)।
৫) সাধারণ ভাবে আপনার সকল সন্তানকেই রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যাবার অভ্যাস গড়ে তুলতে তাগিদ দেবেন। সেই সাথে, সকালে তারা যেন নাস্তার অন্তত এক ঘন্টা আগে ঘুম থেকে ওঠে এবং বিছানা ছাড়ে সে দিকে খেয়াল করবেন ইনশা’আল্লাহ্! ক্লাসে অমনোযোগী হবার দু’টো প্রধান কারণ হচ্ছে: রাতে দেরী করে ঘুমানো এবং সকালে “পরিপূর্ণ” নাস্তা না করে আসা। আর বিশেষত, আপনার সন্তান যদি বয়োঃসন্ধির কাছাকাছি বয়সের হয়, তবে খেয়াল রাখবেন, সে যেন রাতে বিছানায় শুয়ে জেগে না থাকে; প্রয়োজনে তাকে দিনে ঘুম থেকে বিরত রাখবেন এবং খেলাধূলাসহ শারীরিক পরিশ্রমের ব্যবস্থা করবেন যেন রাতে বিছানায় যাবার সাথে সাথে সে ঘুমিয়ে পড়ে।
৬) ছেলেমেয়েকে যত বেশী সম্ভব সময় দেবেন – তাদের বন্ধু হবার চেষ্টা করবেন। পৃথিবীর প্রতিকূল পরিবেশে কোন অসুন্দর বা অকল্যাণকর ইঙ্গিতের সম্মুখীন হলে, তারা যেন প্রাণ খুলে সবার আগে আপনাকেই সে কথা জানাতে পারে। ১-১২ বছর সময়টা আপনার সন্তানের চরিত্রের ভিত্তি গঠিত হবার সময় – এই সময়টা একবার পার হয়ে গেলে, আপনি তাকে আর শতচেষ্টাতেও হয়তো আপনার কাঙ্খিত নৈতিক ও আদর্শিক পথে পরিচালিত করতে পারবেন না। তখন তার জন্য আপনার সময় হলেও, আপনার কথা শোনার সময়, আগ্রহ বা ধৈর্য তার নাও থাকতে পারে।
৭) আপনার সন্তানের জন্য সুস্থ বিনোদনের ব্যবস্থা করবেন। আমরা বুঝি, এখনকার নাগরিক ঢাকায় যেখানে তিল ধারণের ঠাঁই নাই, সেখানে এককালের খেলার মাঠগুলো আজ “ইঁটের জঙ্গলে” পরিণত হয়েছে। তবু সময় ও সুযোগ বের করে অন্তত ছেলে সন্তানদের, সপ্তাহান্তে হলেও, বিরল খেলার মাঠগুলোতে বা খোলা জায়গায় নিয়ে যাবেন – কিছু খেলার সরঞ্জাম সাথে নিয়ে। গোটা পরিবার নিয়ে যত ঘন ঘন সম্ভব প্রকৃতির মাঝে, প্রকৃতির কাছে যাবেন ইনশা’আল্লাহ্। মনে রাখবেন: কাদা, মাটি, ঘাস, শিশির ইত্যাদির সংস্পর্শে আমাদের সুস্থতা ও পরিপূর্ণতা রয়েছে জেনেই আল্লাহ্ আমাদের জন্য এই দেশটা নির্ধারণ করেছেন।
৮) আপনার সন্তানদের মাঝে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। নিজে দেখে ও বেছে বেছে তাদের জন্য বই কিনবেন। নবীদের জীবনী, সাহাবীদের জীবনী, ভ্রমণকাহিনী, এডভ্যাঞ্চার ইত্যাদি খুঁজে বের করে কিনবেন – প্রয়োজনে তাদের বই পড়ে শোনাবেন, ইনশা’আল্লাহ্!
৯) চটুল/হালকা কথাবার্তা বলে থাকেন, এমন “বড়দের” কাছ থেকে সন্তানদের দূরে রাখবেন। অনেক সময়ই নানা/দাদা/নানী/দাদী/দূলাভাই/ভাবী ইত্যাদি সম্পর্কীয় আত্মীয়স্বজন আদি-রসাত্মক ঠাট্টা করে থাকেন। সচেতনভাবে আপনার সন্তানকে এসব থেকে বাঁচিয়ে রাখবেন ইনশা’আল্লাহ্। এছাড়া আপনার (স্কুলে পড়া বয়সের) সন্তান যেন বহিরাগতদের (বিশেষভাবে বিপরীত লিঙ্গের) কারো কোলে না বসে, সেদিকে খেয়াল রাখবেন!
১০) আপনার সন্তান যত ছোটই হোক না কেন – আপনার সন্তানকে গৃহপরিচারিকা, ড্রাইভার বা দারোয়ান, এই শ্রেণীর সাহায্যকারীদের প্রযত্নে কিছুতেই একা বা নির্জনে রেখে যাবেন না। গৃহপরিচারিকাদের সাথে আপনার ছোট বাচ্চারা খেলাধূলা করতে পারে, তবে তা আপনাদের চোখের সামনে হতে হবে আড়ালে নয়।
১১) আপনার সন্তানকে আপনার একক পরিবারের বাইরের কারো সাথে কখনোই বিছানা শেয়ার করতে দেবেন না। ১০ বছর বয়স হলে কারো সাথেই বিছানা শেয়ার করা বৈধ নয় – তখন তার জন্য অবশ্যই আলাদা বিছানার ব্যবস্থা করবেন, ইনশা’আল্লাহ্।
১২) সন্তানরা যা চাইবে তাই দিতে হবে – এই পশ্চিমা trend থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করবেন ইনশা’আল্লাহ্! বরং সামান্য “বাড়াবাড়ি আব্দারেই” তাদের “না” বলতে শিখুন। সব চাওয়া “চাহিবামাত্র” পেলে, তারা একিদকে যেমন অকৃতজ্ঞ (বা নাশোকর) ও স্বার্থপর হবার সম্ভাবনা থাকে, তেমনি অপরদিকে তাদের অসহিষ্ণু হয়ে বেড়ে ওঠাটাই স্বাভাবিক।
১৩) অন্যদের সাথে যেকোন মূল্যে প্রতিযোগীতায় জিততেই হবে – এমন ধারণা দিয়ে তাদেরকে, মুসলিম “ভাই-বন্ধুর” বিরুদ্ধে হিংসা-ঘৃণা-বিদ্বেষ পোষণ করে জীবনের সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠতে প্ররোচিত করবেন না। বরং, একজন মুসলিম আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য, সকল কাজ ভালো/সুন্দর করে করবে – এই বোধ দিয়ে তাদের বড় করবেন। মুসলিম হিসেবে একজন মানুষের সবচেয়ে উচ্চতর মর্যাদা হচ্ছে যখন সে “ইহসানের” উপর প্রতিষ্ঠিত হয়ে একজন “মুহসীনে” পরিণত হয়। ইহসানের একটা সংজ্ঞা হচ্ছে: Doing things beautifully for the sake of Allah!
মুহাম্মাদ এনামুল হক
কনভেনার, এস.সি.ডি;
চেয়ারম্যান, আই.সি.ডি
সংক্ষিপ্ত সিলেবাস (মে-জুন, ২০২১)
(১ম – ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত অনলাইন ক্লাসের জন্য সংক্ষিপ্ত সিলেবাস)
https://docs.google.com/document/d/158J-Ly3uGsjZ6V7-5hYfpGdPNaPIhCaHqi50DFedu4E/edit?usp=sharing